ভাষার ব্যবহারে গম্ভীর সংযত হতে পারতেন

ভাষার
ইংল্যান্ড–ভারত পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছে গত সোমবার। কিন্তু এই সিরিজ নিয়ে কথা থামেনি। ওভালে সিরিজের শেষ টেস্টের আগে স্টেডিয়ামের কিউরেটর লি ফোর্টিসের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধে জড়ান ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর। ব্যাপারটি তখন বেশ আলোচনারও জন্ম দিয়েছিল। এত দিন পর এ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার ম্যাথু হেইডেন বলেছেন, গম্ভীর আরও ভালোভাবে নিজের আবেগ সামলাতে পারতেন। কিউরেটর ফোর্টিসের আচরণেরও সমালোচনা করেন হেইডেন। ঘটনাটায় আগে একবার ফিরে তাকানো যাক। ম্যাচের দুই দিন আগে ওভালে অনুশীলনে গিয়ে গৌতম গম্ভীর খেলোয়াড়দের নিয়ে ঢুকে পড়েন ক্রিজের কাছাকাছি ‘প্লেয়িং এরিয়া’য়। ব্যাপারটা পছন্দ হয়নি কিউরেটর ফোর্টিসের। তিনি গম্ভীরের দলকে ২.৫ মিটার দূরে থাকতে বলেন। ফোর্টিস তখন গম্ভীরকে ডেকে কিছু বলেছিলেন, যেটা ভালো লাগেনি ভারতের কোচের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তখন জানিয়েছিল, ফোর্টিসের দিকে আঙুল উঁচিয়ে গম্ভীর বলেছেন, ‘আমাদের কী করতে হবে, সেটা তোমার বলার প্রয়োজন নেই।’ গম্ভীরের হঠাৎ রেগে যাওয়া মানতে পারেননি ফোর্টিসও। তিনি গম্ভীরের আচরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার হুমকি দেন। গম্ভীর পাল্টা উত্তর দেন, ‘এসব বন্ধ করো। আমাদের বলতে হবে না যে আমরা কী করব। ভারতের কোনো খেলোয়াড়কে তোমার এটা বলার কোনো অধিকার নেই যে তারা কী করবে। তুমি তো শুধু একজন মাঠকর্মী। এর বাইরে আর কিছু নও। যাও, তুমি যার কাছে খুশি গিয়ে অভিযোগ করতে পারো। তুমি বলতে এসো না যে আমাদের কী করতে হবে।’ ‘অল ওভার বার ক্রিকেট’ পডকাস্টে হেইডেন এ নিয়ে বলেছেন, ‘এটা ইংল্যান্ডে প্রায়ই হয়। যেন একধরনের ক্ষমতার প্রদর্শন—এ আমার ভেন্যু, শেষ টেস্ট, আমি গম্ভীরকে একটু কঠিন অবস্থায় ফেলব। কিন্তু গম্ভীরও একটু সংযত হতে পারতেন। ভাষা আরও ভালো হতে পারত। তবে বাস্তবতা হলো, তাঁর দলটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেস্টের আগে অনুশীলন করছে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’ ফোর্টিস ও গম্ভীরের মধ্যে ঝামেলার কারণ হিসেবে অন্য একটি বিষয় তখন জানিয়েছিল টাইমস অব ইন্ডিয়া। তাঁদের খবর অনুযায়ী, ওভালে গম্ভীর তাঁর ব্যাটসম্যানদের নেট অনুশীলন মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। সে সময় বারবার গম্ভীরকে কিছু বলছিলেন ফোর্টিস। সংবাদমাধ্যমটির ধারণা, গম্ভীরকে তিনি কোনো পরামর্শ দিচ্ছিলেন, সেটা ভালোভাবে নেননি ভারতের এই কোচ। দুজনের বাগ্‌যুদ্ধে শান্তিদূতের ভূমিকা পালন করেন ভারতের ব্যাটিং সীতাংশু কোটাক। তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন, ‘পিচ দেখতে গিয়ে কেউ একজন আমাদের ২.৫ মিটার দূরে থাকতে বলেছে। এটা বিস্ময়কর...একটু অদ্ভুত লেগেছে। মাঠে আমরা অনেক থেকেছি, অনেক ক্রিকেট খেলেছি। কিউরেটর মাঠ নিয়ে আধিপত্যপ্রবণ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে, তারা খুবই দক্ষ ও বুদ্ধিমান একদল মানুষের সঙ্গে কথা বলছে।’ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার গ্রেগ ব্লিউয়েটও হেইডেনের সঙ্গে একমত হয়ে মনে করেন, ভাষার ব্যবহারে আরেকটু সংযত হওয়া উচিত ছিল গম্ভীরের, ‘আমি একমত। এমনকি এখন ধারাভাষ্যকার পিচের কাছে গেলে সবাই বলেন, ওটার কাছাকাছি যাওয়া যাবে না। যদিও (ধারাভাষ্যকারদের পায়ে) স্পাইক থাকে না। এটা অদ্ভুত, হতাশ লাগে। তবে সে (গম্ভীর) যে ভাষা ব্যবহার করেছে, সেটা অতটা ভালো ছিল না, তা নিয়ে আমি একমত। সে নিজে ভাবলেই বুঝবে আরও ভালোভাবে সামলাতে পারত।’ ফোর্টিস পরে গম্ভীরের সঙ্গে বাগ্‌যুদ্ধ নিয়ে মুখ খোলেন। ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘আমি কখনোই খলনায়ক ছিলাম না, আমাকে বানানো হয়েছে। তবে আশা করি, সবাই খেলা উপভোগ করেছে। ওভালে আইপিএলের মতোই আবহ ছিল। দুর্দান্ত ম্যাচ হয়েছে।’ ওভাল টেস্ট ৬ রানে জিতে সিরিজ ২–২–এ ড্র করে ভারত। আমারবাঙলা/জিজি

Join Telegram

Post a Comment

Previous Post Next Post