মানুষকে সামনে রেখেই এবারের বাজেট সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে। সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় জাতির সামনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনে একটি উন্নত সমাজ বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে আমরা যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বনভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ। যার মাধ্যমে আমূল পরিবর্তন হবে এ দেশের মানুষের জীবনমানের। মুক্তি মিলবে বৈষম্যের দুষ্টচক্র থেকে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যেসব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। বাজেট প্রস্তাবের বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই বিপ্লবে আত্মোৎসর্গকারীরা আমাদের সামনে একটি বিরল সুযোগ তৈরি করে দিয়ে গেছেন দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করে ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত গড়ার। আপনাদের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতায় সে লক্ষ্য পূরণের প্রত্যয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের অঙ্গীকার পূরণ করাই হবে আগামী দিনে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ সময় তিনি বলেন, গত দেড় দশকে দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে দেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। তাই দেশকে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের রূপরেখা তৈরি এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ইতোমধ্যে সবগুলো কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর সংশোধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে পাচার অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন অনুসরণে দুর্নীতি দমন কমিশন যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত ‘দুদক সংস্কার কমিশন’ সম্প্রতি তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে যা যাচাইপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। আমারবাঙলা/ইউকে
Join Telegram
Tags:
Amarbangla Feed